আবিরের প্রত্যাখানের পর জিতু হলেন অপরাজিত! কিন্তু কেন অপরাজিত ফিরিয়েছিলেন আবির?

বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ‘অপরাজিত’। সত্যজিৎ রায়ের জীবনী ভিত্তিক এই সিনেমা বাংলা ছবির হাল ফিরিয়ে দিয়েছে। রেকর্ড মাত্রায় সাফল্য এবং প্রশংসা কুড়িয়েছে এই ছবি। ছবিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে সত্যজিৎ রায় রীতিমতো লড়াই করে সেইসময় দাঁড়িয়ে অন্য ঘরানার ছবি পথের পাঁচালী তৈরি করেছিলেন। সত্যজিতের চরিত্র জীবন্ত করে দিয়েছেন যিনি তিনি টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা জিতু কমল।
‘রাগে অনুরাগে’ ধারাবাহিকের মল্লারের চরিত্র করেই জিতু সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন, পরবর্তীতে একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে কাজ করেছেন তিনি। অপরাজিত ছবিটি করতে গিয়ে নিরলস পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে, সত্যজিৎ রায়কে নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তোলার জন্য দাঁতের সেটিং অবধি বদলে ফেলেছিলেন জিতু। কিন্তু জিতুর এত চেষ্টা রূপই পেতো না যদি না টলিউড ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা আবির এই ছবিটি ফেরাতেন।
অনেকেই জানেন না যে, অপরাজিত ছবির জন্য অনীকের প্রথম পছন্দ ছিলেন আবির চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই ছবির কাজ থেকে পিছিয়ে আসতে হয় আবিরকে। সেই প্রসঙ্গে অনীক বলেন, বাস্তবে সত্যজিতের মত দেখতে কাউকে এই ইন্ডাস্ট্রিতেই পেয়ে যাবেন তা ভাবেননি পরিচালক! তাই অপরাজিত চরিত্রের জন্য আবিরকে ভেবেছিলেন তিনি, সেই অনুযায়ী কথাবার্তা হয়ে গিয়েছিল কিন্তু তারিখ নিয়ে সমস্যা হওয়ার কারণে পিছিয়ে আসতে হয় আবিরকে। হঠাৎ করে লকডাউন উঠে যাওয়ায় আবিরের অন্যান্য যেসকল ছবিগুলোর কাজ আটকে ছিল সেগুলি নতুন করে আবার শুরু হয়। এতে সমস্যায় পড়ে যায় আবির। এরপর একদিন মাথা নিচু করে তার কাছে এসে সব টা খুলে বলেছিলেন অভিনেতা।
অনীক দত্ত বুঝতে পেরেছিলেন আবিরের সমস্যাটা। তিনি যে ইচ্ছা করে এই ছবি ফেরাননি তাও বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। অপরাজিত ছবির জন্য টানা দু’মাস শুটিং করতেই হতো অন্যদিকে আবিরের পক্ষে সেটা সম্ভব ছিল না তাই বাধ্য হয়েই ছবিটি ছেড়ে দেন আবির।
অন্যদিকে জিতু কমল প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন যে,জিতুকে তিনি আগে থাকতে চিনতেন না, সত্যজিতের চেহারার সাথে মিল আছে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন বলেই চরিত্রের নাম বদলে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু জিতুর কাজ দেখার পর তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। অনেক বাধা অতিক্রম করে চরিত্রটিকে সার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জিতু। পরিচালকের মনে হয়, যেভাবে কাজটি করার সময় দ্রুত জিতু সবকিছু শিখে নিচ্ছিলেন, তাতে মনে হয়, সে সময় হয়তো জিতুর উপর কেউ ভর করেছিল।