সিনেমা

বিক্রি হয়ে গিয়েছে ডাক্তার‌ও, প্রতিবাদে মুখর প্রসেনজিৎ, শুভশ্রী

ডাক্তারি পেশা বর্তমানে আর মানবসেবা নয় তা ব্যবসারই নামান্তর হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা সময় পাড়ায় যেভাবে ডাক্তার কাকুদের দেখা যেত হামেশাই এখন আর তেমনটা দেখা যায় না। কোন শয্যাশায়ী রোগীকে দেখতেও ডাক্তাররা আর রোগীদের বাড়ি যান না। তাই তো সাহিত্যিক বনফুলের সৃষ্ট অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় দেখা চিকিৎসক অগ্নীশ্বর মুখোপাধ্যায়দের আর ধারেকাছেও কোথাও দেখা যায় না। কোথায় যেন হারিয়ে গেছেন তারা। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বেশিরভাগ ডাক্তারদের মানবসেবা, মানবিকতা লুপ্ত হয়ে ব্যবসার জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে আর যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে ডাক্তারদের এইভাবে পরিবর্তন হওয়াকেই সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরছেন পরিচালক পাভেল।

আরও পড়ুন: বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে অন্য কেউ বাঁচাতে পারবে না বিস্ফোরক মন্তব্য সুদীপ্তার

পাভেল পরিচালিত সিনেমার নাম ‘ডাক্তার কাকু’। ছবির বিষয়বস্তু, ছবির বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করা অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের নাম – একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খোলসা করে বলেন পরিচালক। পরিচালকের কথায়,“সবই তো এখন বিক্রির খাতায়। চিকিৎসা পরিষেবা‌ও। মানবসেবা মুছে সেখানেও ব্যবসার ছায়া। পাড়ার ডাক্তার কাকুদের আমরাই হেলায় হারিয়েছি। কী ছিল, কী গেল আর কী কী আগলে রাখতে হবে-একুশ শতককে জানতে হবে তো”-তাই দুই প্রজন্মের চিকিৎসা ধারায় সেতুবন্ধনের পাশাপাশি চিকিৎসা পরিষেবা যাবতীয় সমস্যার সমাধান নিয়ে তৈরি হচ্ছে ‘ডাক্তার কাকু’

ছবিতে ডাক্তার কাকুর ভূমিকায় দেখা যাবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তার স্ত্রীর ভূমিকায় থাকবেন শুভশ্রী গাঙ্গুলী আর প্রসেনজিতের দুই ছেলে পুশকিন ও পচা। পুশকিনের চরিত্রে অভিনয় করবেন ঋদ্ধি সেন, পচার চরিত্রে পাভেল স্বয়ং অভিনয় করবেন। ঋদ্ধির বিপরীতে দেখা যাবে এনা সাহাকে। এছাড়া‌ও ছবিতে আছেন রজতাভ দত্ত, তুলিকা বসু।

ছবির যাবতীয় প্রশ্ন তিনটি চরিত্রকে ঘিরে ঘুরপাক খাচ্ছে। মূল ডাক্তার কাকুর চরিত্র দিলীপ সাহা আর তার দুই ছেলে পচা ও পুশকিন। ছবির মোশন লোগোতে দেখা গেছে, দিলীপ সাহার সর্বক্ষণের সঙ্গী তিনটে জিনিস স্টেথোস্কোপ, স্কুটার আর কাগজের প্লেন। ডাক্তার মানুষ বলে স্টেথোস্কোপ সাথে থাকে আর স্কুটারে করে ডাক্তার কাকু পাড়া ঘুরে বেড়ান। কিন্তু কাগজের প্লেন কেন? এর উত্তরে পরিচালক বলেন, “কাগজের প্লেন একা ডাক্তার নয়, তার দুই ছেলের জীবনেও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু এর রহস্য এখনই ভাঙা যাবে না।”

আরও পড়ুন: জানেন কি জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিং কে আজও কেনো ক্ষমা করতে পারেননি সলমন খান? পেছনে আসল কি রহস্যই বা রয়েছে

ছবির গল্প অনুযায়ী দেখা যাবে , ডাক্তার কাকু আগের প্রজন্মের চিকিৎসক তিনি ডাক্তারি বলতে বোঝেন মানবসেবা আর সেই সেবা করতে গিয়ে তার খাওয়া-দাওয়া কোন কিছুই হুঁশ থাকেনা। পাড়া ও আশেপাশের মানুষের কাছে তাই দিলীপ সাহা সাক্ষাৎ ঈশ্বর। নিজের কাজ অন্তপ্রাণ এই স্বামীকেই সামলান স্ত্রী পারমিতা। হঠাৎই সাময়িক অসুস্থ হয়ে পারমিতার আকস্মিক মৃত্যু ঘটে আর এই মৃত্যু‌ই ডাক্তার কাকুকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। কারণ স্ত্রীর মৃত্যুর সময় তিনি প্রতিবেশীর অসুস্থ স্ত্রীর সেবায় ব্যস্ত ছিলেন। তাই মায়ের মৃত্যুর জন্য ছেলেদের কাছে বিতৃষ্ণার কারণ হয়ে ওঠেন তিনি, কর্তব্যের খাতিরে এরপর সন্তানদের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন দিলীপ সাহা। তার দুই ছেলে পুশকিন, পচাও ডাক্তার হয়। কিন্তু তারা এই যুগের ডাক্তার, তাই তারা প্রলোভনকে এড়াতে পারে না। ডাক্তার কাকু দুই ছেলেকে প্রলোভনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কি সফল হবে ডাক্তার কাকু? সেটাই বলবে এই গল্প।

উল্লেখ্য কলকাতা বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি এই ছবির শুটিং হয়েছে পুরুলিয়াতেও। ইতিমধ্যেই এই ছবির ৮০ শতাংশ শ্যুটিং শেষ হয়ে গিয়েছে।

Related Articles

Back to top button