অবশেষে মুখ খুললেন রূপঙ্কর! নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন, ডিলিট করলেন ভিডিও! ঝড় বয়ে গেছে তার ওপর, বললেন সেই অভিজ্ঞতা

অবশেষে মুখ খুললেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। কেকে – র লাইভ ভিডিওতে শ্রোতাদের উন্মাদনা আবেগ দেখে রূপঙ্কর বলতে চেয়েছিলেন আপনারা বাঙালি সংস্কৃতির দিকেও একটু তাকান। কিন্তু তাঁর বলার ধরনটা ছিল একটু অন্যরকম যে কারণে মানুষজন তাকে ক্রমাগত ভুল বুঝতে শুরু করেন আর একটার পর একটা হুমকিমূলক ফোন মেসেজ বার্তা যেতে শুরু করে রূপঙ্করের কাছে। কেকের মৃত্যুর পর সকলে কেকের মৃত্যুর জন্য রূপঙ্করকেই দায়ী করতে শুরু করেন। অজস্র ট্রোলিং ভিডিও তে কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ করা হয় রূপঙ্কর সম্পর্কে। অবশেষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন রূপঙ্কর বাগচী, ফেসবুক থেকে ডিলিট করলেন তার ভিডিও।
এইদিন রূপঙ্কর বলেন, “প্রথমেই প্রয়াত কেকের পরিবারের কাছে নিঃশর্ত দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার যে ভিডিওটি গত ক’দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ও তার বাইরের এত বিরামহীন উত্তেজনার উপাদান হয়েছে এখানে পৌঁছবার আগে সেটি আমি ফেসবুক থেকে ডিলিট করলাম। পরলোকগত গায়কের পরিবারের কারও সঙ্গে আমার পরিচয় নেই কিন্তু আপনাদের মাধ্যমে মুম্বাইবাসী তাদের আবার জানাচ্ছি যে, আমি আন্তরিক দুঃখিত। কেকে আজ যেখানেই থাকুন ঈশ্বর যেন ওকে শান্তিতে রাখেন।”
এরপর বিগত কয়েক দিন তার ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে তার উল্লেখ করে রূপঙ্কর বলেন, “আমার সংগীত জীবনে এইরকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবি নি। যেখানে উড়িষ্যায় বসে করা একটা ভিডিও পোস্ট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার গোটা পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক দুর্ভাবনা এবং মানসিক নিপীড়নের মধ্যে। যেখানে আমার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা রক্ষায় পাহারা দেবে টালা থানার পুলিশ। নিয়ত হুমকি এসেই যাবে আমার স্ত্রীর ফোনে। গায়ক হিসেবে দেশে-বিদেশে এত লক্ষ লক্ষ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি তাদের আবেগ অনুভব করেছি এত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছি। মুহূর্তের অসতর্কতা যে এমন গনগনে এবং মারমুখী আবেগ বয়ে আনবে কে জানতো? এত ঘৃণা এত আক্রোশ এত বিরুদ্ধতা কিন্তু অনেকটাই তৈরি হলো আমার বক্তব্য আমি ঠিক মতো গুছিয়ে বলতে না পারায়।”
রূপঙ্কর তার বক্তব্যকে বুঝিয়ে বলে এবার নিঃশর্ত ক্ষমা চান, গায়কের কথায়,“প্রয়াত কেকে সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিদ্বেষ নেই। থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমি শুধু ওর কনসার্ট নিয়ে তৈরি হওয়া উন্মাদনা লক্ষ্য করে বলতে চেয়েছিলাম, বাঙালি গায়কদের জন্য আপনারা একই রকম দরদ দেখান। ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদে এবং আপনাদের শুভেচ্ছায় গায়ক হিসেবে আমার ব্যক্তিগত কোন হতাশা নেই। কিন্তু বাঙালি গায়ক হিসেবে সমষ্টিগত বিপন্নতা রয়েছে। ইদানীং আরো বেশি করে বারবার মনে হয় দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারত যেভাবে তার শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ে আমরা যেন সেটা করতে দ্বিধা গ্রস্ত। শিল্প , সাহিত্য, সঙ্গীত সবেতেই প্রাদেশিক পারফর্মার যেন কঠিন খাদের ধারে, এক অস্তিত্বের সংকটে দাঁড়িয়ে। তাই আমি একার কথা বলতে চাইনি একটা সমষ্টির কথা বলতে চেয়েছিলাম। একইসঙ্গে তাই আরো কিছু সমযোদ্ধার নাম করেছিলাম যাদের ট্যালেন্ট আমার মতে জাতীয় পর্যায়ের। পরে মনে হয়েছে নামগুলো বলার আগে জিজ্ঞেস করে নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আবার বলি এককভাবে ইস্যুটা দেখিনি। কেকের মতো ভারত বিখ্যাত পারফরমারের নামটা নিছক প্রতীক ছিল। নিছক উপলক্ষ, লক্ষ্য কখনো তিনি ছিলেন না। থাকার প্রশ্ন নেই। কে জানতো চরম দুর্ভাগ্য কেকের জন্য এইভাবে ওত পেতে রয়েছে। একজন প্রথিতযশা শিল্পী কলকাতার মঞ্চে গাইতে এসে এভাবে প্রাণ হারালেন সেটা খুবই হৃদয়বিদারক। আমি আজ আপনাদের কারো সঙ্গে আলাদা করে কথা বলছি না। পরে নিশ্চয়ই বলবো। কিন্তু আজ সেই দিন নয় আপনাদের কাছে মার্জনা চাইছি আগাম।”