‘আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দেওয়া মা এগ ডোনারকে ধন্যবাদ জানিয়ে যায়!’ উদ্ভট তত্ত্ব উঠে এলো দিদি নাম্বার ওয়ান এর মঞ্চে! প্রবল আপত্তি তুললেন নেটিজেনরা!

রচনা ব্যানার্জী সঞ্চালিত জি বাংলার জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’-এ প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে দিদিরা এসে হাজির হন। তারা তাদের অনুপ্রেরণামূলক জীবনের কাহিনী বলেন যা শুনে সকলে উদ্বুদ্ধ হন। কেউ হিংস্র জন্তুর সাথে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে এসেছেন, কেউ বা মানুষরূপী হিংস্র অমানুষের সাথে লড়াই করে নতুন করে জীবন শুরু করেছেন, কেউ বা শূন্য থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। কেউ বা ব্যবসা করে বিশাল বড় জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন।
মাঝখানে এই শোয়ের মঞ্চে সঞ্চালিকা হিসেবে দেবশ্রী রায় এসেছিলেন, এখানে সঞ্চালনা করেছিলেন জুন মালিয়া ও, কিন্তু আর রচনা ব্যানার্জীর জনপ্রিয়তাকে তা টপকাতে পারেনি। কিছুদিন আগেই এই শো তে এসেছিলেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী। তার আসন্ন ছবি ‘আয় খুকু আয়’ এর প্রচারের জন্য এসেছিলেন এই মঞ্চে। এছাড়া প্রায় অনেক সেলিব্রিটিরাও এই মঞ্চে আসেন। অনেক ধারাবাহিকের টিমও একসাথে এই মঞ্চে এসে খেলে যান।
এই দিদি নাম্বার ওয়ান নিয়ে একটি অভিযোগও আছে মানুষের মনে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহিলারা যখন এই মঞ্চে এসে তাদের জীবনের ভয়ঙ্কর সমস্ত অভিজ্ঞতার কথা এবং লড়াইয়ের কথা বলেন তখন অনেকবারই অভিযোগ ওঠে যে, তারা অনেক কথাই রংচং মাখিয়ে বলেন, বা বলা ভাল একটু বেশি বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলেন, তারা যা কিছু বলেন সবটা আসলে সত্যি নয়। সম্প্রতি একটি এপিসোডে দেখা গেছে যে এই মঞ্চে উপস্থিত হওয়া দিদি এমন এক বক্তব্য রেখেছেন যা রীতিমতো অনুচিত কাজ।
বর্তমান যুগে গর্ভধারণ করতে গিয়ে অনেকেরই অনেক রকম সমস্যা হয়, তাই অনেকেই আইভিএফ ট্রিটমেন্ট করেন। সন্তান লাভের জন্য তারা আইভিএফ করেন নিজের শরীরে, এর ফলে ইনজেকশনের মাধ্যমে তাদের ডিম্বাশয় বড় করে তাদের থেকে ডিম্বাণু নিয়ে সেটির নিষেক ঘটিয়ে তাদের গর্ভে স্থাপন করা হয়। এছাড়াও অনেক মহিলাদের ডিম্বাণু উৎপাদন হয় না কিন্তু তারা যখন মাতৃত্বের সুখ অনুভব করতে চান তখন এমন অনেক মানুষ থাকে যারা এগ ডোনেট করেন। অনেকের ন্যাচেরাল ডিম্বাণু দেওয়া হয় আবার অনেককে ইনজেকশনের মাধ্যমে ডিম্বাশয় বড় করিয়ে তাদের থেকে ডিম্বাণু নেওয়া হয়। তবে এই পুরো প্রক্রিয়াটা গোপন থাকে, যিনি আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হন তিনি কখনই জানেন না যে, কোন মহিলার শরীরের ডিম্বাণু দিয়ে তৈরি ভ্রুণ তার শরীরের ভেতরে প্রবেশ করছে। কিন্তু সম্প্রতি দিদি নাম্বার ওয়ানের এপিসোডে মামন বিশ্বাস বলে একজন মহিলা আসেন।
তিনি বলেন যে,“ আমি এগ ডোনেট করি। আট দশ দিন ইনজেকশনের মাধ্যমে আমার ডিম্বাশয় বাড়ানো হয় এবং আমার থেকে ডিম্বাণু নেওয়া হয়। ” মা হওয়ার পর বহু মহিলা তার কাছে এসে ধন্যবাদ জানিয়ে যান বলেও দাবি করেন তিনি। এরপর জি বাংলার মঞ্চে রচনার সামনে আই ভি এফের পুরো প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, একবার এগ ডোনেট করলে তিনি কুড়ি হাজার টাকা করে পান। একই সাথে তিনি এও বলেন যে, তিনি অনেক মহিলাকে এই কাজে নিয়েও এসেছেন। এই এপিসোড নিয়েই নেটিজেনরা আপত্তি তুলেছেন, নেটিজেনদের বক্তব্য যে, একটি টেলিভিশন চ্যানেলে এইভাবে এগ ডোনারের পরিচয় প্রকাশ্যে আনা যায় না। তিনি অনেক মহিলার মুখে হাসি ফোটান ঠিক আছে, কিন্তু তা বলে এই ভাবে সবটা টিভির সামনে প্রকাশ্যে আনা উচিত নয়। এতে তার কাজের জগতের অনেক ক্ষতি হতে পারে!
একজন নেটিজেন প্রকাশ্যে দাবি করেন যে, এই মহিলা যে বলছেন যারা মা হয় তারা নাকি ওনার হাত ধরে এসে ওনাকে ধন্যবাদ জানায়, এটা ঠিক নয় কারণ আইভিএফ সেন্টারে এদের পরিচয় সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখা হয়। একজনের দাবি করেছেন, যে নয় এই ভদ্রমহিলার ভিডিওটি চ্যানেলে থেকে ডিলিট করা হোক অথবা তার কথাগুলোকে মিউট করে দেওয়া হোক। কারণ এই ট্রিটমেন্ট সম্পূর্ণ গোপনীয়, এটা পাবলিক করা কখনই উচিত নয়।