বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে অন্য কেউ বাঁচাতে পারবে না বিস্ফোরক মন্তব্য সুদীপ্তার

রুপোলি পর্দার ঝাঁ-চকচকে চাকচিক্যের ভিতরে যে কত রকমের কোন্দল রয়েছে তা প্রতিনিয়ত টের পাওয়া যায় বিভিন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কথায়। সম্প্রতি আবারও এই বিষয়টায় আরও বেশি করে পরিষ্কার হয়ে উঠলো টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর কথায়। এইদিন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির কিছু দুমুখো মানুষদেরকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের করা বক্তব্যের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রির একাংশকে এই দিন রীতিমতো তুলোধোনা করেছেন তিনি। একই সাথে তিনি বলেছেন নেতিবাচকতা থেকে দূরে থাকতে। অভিনেত্রীর করা সেই পোষ্ট পরে নেটাগরিকরাও তার সাথে সহমত পোষণ করেছেন।
অভিনেত্রীর এইদিন ফেসবুক পোস্টে লেখেন যে দয়া-দাক্ষিণ্য নিয়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি বেঁচে থাকতে পারবে না, আর যারা ইন্ডাস্ট্রির ভিতর থেকে একে অন্যের ক্ষতি করতে চাইছেন, তাদেরকেও তুলোধোনা করেছেন তিনি। অভিনেত্রীর পোষ্ট তাই নেট পাড়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। অভিনেত্রীর কথায় সহমত পোষণ করে নেটিজেনরাও নানান রকম বক্তব্য করেছেন। কেউ বলেছেন- “এই তো! মৌচাকে ঢিলটা ছুঁড়েছ … বেশ হয়েছে।” কেউ আবার বলেছেন, “একদম ঠিক দয়া-দাক্ষিণ্যে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে না, বাঁচবো না আমরাও।”
ফেসবুকের একটি পোস্টে সুদীপ্তা লিখেছেন-“‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান। দলে দলে বাংলা ছবি দেখুন। আমরা খুব কষ্ট করে সিনেমাটা বানিয়েছি। আপনারা দেখতে আসুন। বাংলা সিনেমাকে সাপোর্ট করুন। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচান।’- এই কথাগুলো খুব শিশুসুলভ লাগে আজকাল। খালি মনে হয় একজন গৃহবধূ বা রান্নার লোক বা রেস্টুরেন্টের cook যে রান্নাটা করেন সেটাও তো তারা কষ্ট করেই করেন। তবু খেতে খারাপ হলে আমরা খাই না, রিজেক্ট করি, পয়সা দিয়ে খেলে দু কথা শুনিয়েও আসি, সার্ভিস ভালো না হলে সোশ্যাল মিডিয়াতে বদনাম করি। বন্ধুদের না খেতে/ যেতে অনুরোধ করি। তাহলে সিনেমায় বা বাদ যাবে কেন? সিনেমা ভালো লাগলে লোকে দেখবে না লাগলে দেখবে না। simple”
সুদীপ্তা জানিয়েছেন যে, সব ধরনের খাবারের যেমন খরিদ্দার আছে, সব ধরনের গান শোনার যেমন শ্রোতা আছে, তেমনই নানান রকমের সিনেমা দেখার ও দর্শক আছে। এরপর সুদীপ্তা ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে থাকা দুমুখো ব্যক্তিত্বদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “অন্যদের বলবো “বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচান” আর ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে থেকে একে অন্যের পা ধরে টানবো দুটো একসঙ্গে তো হয় না। আমরা ছোট ছোট চেষ্টাগুলোকে appreciate করতেই ভুলে যাচ্ছি। অপেক্ষাকৃত ছোট অভিনেতা অথবা পরিচালকদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠুকে ঠুকে পোস্ট করে সাময়িক বাহবা নিয়ে আনন্দ পাচ্ছি আর বড় প্রযোজক/পরিচালক/ অভিনেতাদের টুইটারে প্রশংসা করে হোয়াটসঅ্যাপে ফোনে চায়ের আড্ডায় সমালোচনা করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মারছি আমরা। এই অশনিসংকেত বুঝে ফেলে নিজেদের একবার আয়নার সামনে দাঁড় করাবার সময় এসেছে না হলে খুব দেরি হয়ে যাবে হয়তো!!!”
এর পাশাপাশি অভিনেত্রী সকলকে নেতিবাচকতার থেকে দূরে থাকার কথা বলেছেন, কারণ নেতিবাচকতা সবসময় বিষ ছড়ায়, অভিনেত্রীর কথায়,“ছোটবেলায় শিখেছিলাম ভালো লাগলো সবার সামনে বল, খারাপ লাগলে আলাদা করে ডেকে বল।” সবশেষে সুদীপ্তা জানিয়েছেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রাখার দায় একমাত্র ইন্ডাস্ট্রির ভেতরকার মানুষদেরই, আর কারোর নয়-“আমাদের বাঁচিয়ে রাখার দায় অন্য কারোর নেই, কোন দিন ছিলোও না। ওটা আমাদেরই দায়িত্ব।Hope we realise that soon!!!”