তথ্য প্রযুক্তির বিপত্তির কারণে ‘উনিশে এপ্রিলে’র পুরো ছবি ডিলিট হয়ে গিয়েছিল, তারপর ঠিক কী ঘটেছিল জানেন?

১৯৯৮ সালে মুক্তি পেয়েছিলো ঋতুপর্ণ ঘোষের জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সিনেমা ১৯ শে এপ্রিল। এই ছবি মুক্তির আগে ঋতুপর্ণর একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিলো,তাই তাকে সেই ভাবে মানুষ চিনতেন না। এই ছবি শুধু ঋতুপর্ণকে পরিচিতি দিলো না, একই সাথে বাংলা চলচ্চিত্রকেও এক অনন্য মাত্রা এনে দিলো। সেই কারণেই ২৮ বছর পেরিয়ে আজও ১৯শে এপ্রিল প্রাসঙ্গিক! কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই ছবির পুরো শ্যুটটাই টেকনিক্যাল কারণে ডিলিট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিলো ঋতুপর্ণ ঘোষের! তারপর তিনি আবারও শরণাপন্ন হন দেবশ্রী রায়ের কাছে। ঠিক কী ঘটেছিলো ১৯ শে এপ্রিল শ্যুটিংয়ের সময়?
আরও পড়ুন: বাঙালির প্রিয় আলু মাখা পান্তা ভাত বিরাট পত্নী অনুষ্কারও পছন্দের খাবার
বিয়েরবাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষ উনিশে এপ্রিলে অভিনয় করবার প্রস্তাব দেন দেবশ্রীকে। মা-মেয়ের এই ধরনের গল্প তখনও পর্যন্ত বাংলা ছবিতে হয়নি, তাই চিত্রনাট্য শুনে এতই পছন্দ হয়েছিলো যে কম পারিশ্রমিকেও এই ছবিতে কাজ করতে রাজি হয়ে যান দেবশ্রী। এরপর একটি ফাঁকা বাড়িকে শ্যুটিংয়ের জন্য সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট দিনে ছবির শুটিং শুরু হয়ে যায়। যে বাড়িতে ছবির শুটিং শুরু হয়েছিলো, কথা ছিলো, ছবির শুটিং শেষ হওয়ার পরেই প্রোমোটার সেই বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট তৈরি করবেন। কিন্তু ছবির কাজ শেষ হলেও টেকনিক্যাল কারণে ডিলিট হয়ে গিয়েছিলো পুরো ছবির শুটিং।
এইসময় ঋতুপর্ণ ফোন করে দেবশ্রীকে জানান “সাত দিনের কাজ প্রযুক্তির কারণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এদিকে বাড়িটা প্রোমোটার ভেঙ্গে ফেলবেন তিনি আর শ্যুটের সময় দেবেন না।” সমস্যার কথা জানিয়ে ঋতুপর্ণ দেবশ্রীকে অনুরোধ করেন, “তুই আর রিনাদি তারকা। তোরা গিয়ে যদি অনুরোধ জানাস প্রোমোটার হয়তো মেনে নেবেন।” – ঋতুপর্ণার কথামতো সেদিন অপর্ণা সেন আর দেবশ্রী রায় প্রোমোটারের সাথে কথা বলতে গিয়েছিলেন, দুই তারকার কথায় রাজি হয়েছিলেন প্রোমোটার, সাত দিনের জন্য নতুন করে আবার এই ছবির শুটিং করা হয়েছিলো।
আরও পড়ুন: রনবীর আলিয়ার নতুন সংসারে হানা দিলেন দুই শাশুড়ি, তারপর?
দেবশ্রী রায় এই ছবি প্রসঙ্গে বলেছেন, ছবিটা করতে করতেই অপর্ণা সেন বুঝতে পেরেছিলেন এই ছবি সম্মানিত হবে। অপর্ণা সেন তাকে বলেছিলেন, এই ছবির গল্প, অভিনয়, পরিচালনা সব এত উঁচুমানের যে এই ছবি জাতীয় সম্মান পাবেই। অপর্ণা সেনের কথা মিলে গিয়েছিলো ৩৪৫ টি ছবির মধ্যে সেরা ফিচার ফিল্ম হিসেবে পুরস্কার পেয়েছিলো ১৯ শে এপ্রিল, তৈরি করেছিল নিজস্ব ইতিহাস।