গসিপ

‘বাড়ির অশান্তিতে লুকিয়ে চোখের জল ফেলত মহুয়া’! আজ ৩৭ বছর মহুয়া রায়চৌধুরী আমাদের মধ্যে নেই, প্রিয় বান্ধবীর মৃত্যু দিনে শোক প্রকাশ করলেন অভিনেতা বিপ্লব চ্যাটার্জী

বিপ্লব চ্যাটার্জি এবং মহুয়া রায়চৌধুরী, এই নাম দুটি যেমন একসময় জনপ্রিয় ছিল তেমনি আজও রয়েছে। সমকালীন দুই অভিনেতা-অভিনেত্রীর মধ্যে খুব ভালো বন্ধুর সম্পর্ক ছিল। আমরা সকলেই জানি জনপ্রিয় অভিনেত্রী মহুয়া আজ ৩৭ বছর আমাদের সাথে নেই। বন্ধুর মৃত্যুদিনে অভিনেতা আজও শোকাহত। আজও মেনে নিতে পারেননি বন্ধুর হঠাৎ চলে যাওয়া।

১৯৮৫ সালের ২২ শে জুলাই মৃত্যু হয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর। সমকালীন অভিনেতা বলা ভালো অভিনেত্রীর সহকর্মী তথা বন্ধু বিপ্লব চ্যাটার্জীর কাছে যা আজও অবিশ্বাস্য। এ বিষয়ে বিপ্লব চ্যাটার্জি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “মহুয়ার সঙ্গে পরিচিতি কি আজকের? অভিনয়ে আসার আগে থেকে ওর মাকে চিনতাম। মহুয়া তখন শিপ্রা। ওর মা টেলিফোনে চাকরি করতেন। খুব ভাল নাচ জানতেন। নানা জায়গায় মঞ্চানুষ্ঠান করতেন। মহুয়ার বাবাও জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী।’’ অভিনেত্রী তখন থাকতেন দমদমে। ছোটবেলা থেকে স্বাভাবিকভাবেই নাচের প্রতিভা থাকায় এবং পরবর্তীকালে তালিম নেওয়ায় তিনি দক্ষতা অর্জন করেন নৃত্যশিল্পে। বিখ্যাত পরিচালক তরুণ মজুমদারের “শ্রীমান পৃথ্বীরাজ” থেকে অভিনেত্রীর অভিনয় জগতে পদার্পণ। এরপর আর তাকে পিছন ঘুরে তাকাতে হয়নি।

স্বতন্ত্র ব্যক্তি হিসেবে মহুয়া কেমন ছিলেন সে বিষয়ে বিপ্লব বলেন, ‘‘মহুয়া ফুলের মতোই মিষ্টি ছিল। যেমন রূপ তেমনই প্রতিভা। আজও ওর তুলনা মহুয়া নিজেই। সারা ক্ষণ সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে থাকত। কোনও ভণিতা ছিল না। শিশুদের ভীষণ ভালবাসত। ইন্ডাস্ট্রির দুঃস্থ কলাকুশলীর কত সন্তান যে মহুয়ার দেওয়া অর্থে পড়াশোনা করে বড় হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। রোজগারের একটা বড় অংশ ও অকাতরে দান করে দিত।’’ অভিনেতা এও জানান যে অভিনেত্রী কুকুর খুব ভালবাসতেন। স্টুডিওর সমস্ত কুকুরদের তিনি যত্ন করতেন, তাদের খাওয়াতেন। অভিনেতা জানান যখন মহুয়ার মৃতদেহ স্টুডিওতে নিয়ে আসা হয় তখন এই পথশিশুরা তাদের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। মৃতদেহের সামনে তারা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল। তাদের দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছিল জল।

তবে অভিনেত্রীর মৃত্যু নিয়ে অভিনেতা বিপ্লব চ্যাটার্জি মুখ খুলতে চাননি। অভিনেতা জানান মৃত্যু কখনো বলে আসেনা। আর তাছাড়া মহুয়ার মৃত্যু যেহেতু বিতর্কিত বিষয় তাই জন্য তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য রাখতে চাননা। অভিনেতাকে প্রশ্ন করা হয় যখন অভিনেত্রীর পরিবারে কিছু সমস্যা তৈরি হতো তখন অভিনেত্রী কেমন ব্যবহার করতেন? সে বিষয়ে অভিনেতা বলেন, ‘‘তখন একটু চুপচাপ। হালকা বিষণ্ণ। সবার আড়ালে হয়তো চোখও ভিজে উঠত। কিন্তু কিছুতেই সেটা সবার সামনে প্রকাশ করত না মহুয়া’’। এছাড়াও বন্ধু সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনেক বড় শিল্পী। খুব বড় মনের মেয়ে। আমার ভীষণ ভাল বন্ধু। ওর মৃত্যু আজও মেনে নিতে পারিনি।’’প্রিয় বন্ধুর মৃত্যু অভিনেতাকে আজও যন্ত্রণাদায় একথা স্বীকার করেছেন অভিনেতা।

Related Articles

Back to top button