গসিপ

ভোজন রসিক ঋতুপর্ণকেও শেষের দিনগুলোতে খেতে হতো সেদ্ধ সেদ্ধ খাবার!

আজ থেকে ঠিক ৯ বছর আগে আজকের দিনে অর্থাৎ ৩০ শে মে তে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক তারকা’র পতন ঘটেছিল। তার নাম ঋতুপর্ণ ঘোষ। সেই দিনের কথা, সেই মুহূর্তের কথা আজও ভুলতে পারেন না বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রীরা। বাংলা চলচ্চিত্রে আসা নবাগতদের কাছে ঋতুপর্ণ ছিলেন ছায়ার মত, আর বাংলা চলচ্চিত্র জগতের প্রবীণরা তাদের কাছে ঋতুপর্ণ ছিলেন সব থেকে কাছের বন্ধু। ঋতুপর্ণ ঘোষের না থাকাটা বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একটা বড় শূন্যস্থান তা আজও স্বীকার করেন চলচ্চিত্র জগতের দিকপালরা।

আরও পড়ুন: যে কোনো মূল্যে শ্রাবন্তীকে পেতে মরিয়া হাঁটুর বয়সী শান্ত খান! বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই অভিনেতা কি তবে শ্রাবন্তীর প্রেমে পরলেন?

বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় এই পরিচালক ছোটবেলা থেকেই ছিলেন খাদ্য রসিক। সে সময় যখন এদেশে পিজ্জা, বার্গার পাওয়া যেত না, বিদেশে গেলে বাঙালির পছন্দের খাবার ছিল এইগুলি। তখন পার্ক স্ট্রিটের নামী রেস্তোরাঁতে পাওয়া যেত স্যান্ডউইচ। সেই সময় মেলাতে ফুচকা, এগরোল, চিকেন রোল, কুলফি মালাই, ক্যান্ডি ছিল ভরসা। কিন্তু তখন এসবের দিকে না তাকিয়ে ভোজনরসিক ঋতুপর্ণ বাড়ির সকলকে লুকিয়ে একা একাই টাকা জমিয়ে খেয়ে ফেলেছিলেন ঝাল ঝাল ডিমের ডালনা। পরবর্তীতে তার মা জেনে যাওয়ায় তাকে বকাও খেতে হয়েছিল। কিন্তু ঋতুপর্ণর সান্ত্বনা ছিল বকা খেলেও তিনি ডিমের ডালনা খেতে পেয়েছেন। এতটাই ভোজন রসিক ছিলেন পরিচালক।

পৃথিবীর যে প্রান্তের যে কাজেই ব্যস্ত থাকুক না কেন পুজোর সময় তিনি কলকাতায় ফিরে আসতেন। মায়ের হাতের শুক্তো খাওয়ার জন্য। কিন্তু এই ভোজন রসিক মানুষটিকেই জীবনের শেষ দিনগুলো কষ্টের সাথে কাটাতে হয়েছে। তার বাড়িতে যিনি রান্না করতেন তিনি বলেছিলেন, সিদ্ধ খাবার ছাড়া কিছুই খেতে পারতেন না ঋতুপর্ণ। আসলে হরমোন থেরাপির জন্য যে নির্ধারিত ওষুধ ছিল তাই তার জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

আরও পড়ুন: নুসরতের মা কালীর ভোগ রাঁধার পরেই মিমি দরগায় মাথা ঠেকিয়ে প্রার্থনা করলেন! নুসরতের অনুকরণেই কি এইকাজ করলেন মিমি?

এছাড়া ডায়াবেটিক ছিল তার, ইনসুলিন‌ও নিতেন তিনি। একই সাথে ইনসমনিয়া থাকার জন্য স্লিপিং পিল খেতে হতো তাকে। দীর্ঘদিন এই ওষুধগুলোর প্রভাবে শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এছাড়া পাঁচ বছর ধরে তিনি প্যানক্রিয়াটাইটিসে ভুগছিলেন যার কারণে ওষুধের পাশাপাশি কড়া ডায়েট মানতে হয় তাকে। মৃত্যুর আগের দিন তিনি চাইনিজ রেস্তোরাঁ থেকে পাতলা স্যুপ আনিয়ে খেয়েছিলেন। পরদিন সকালে ঋতুপর্ণর বাড়ির কাজের লোক বিশু অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করার পরও ঘর থেকে যখন ঋতুপর্ণ বেরোলেন না, তখন দরজায় ধাক্কা দিলেন বিশু কিন্তু তখনও ঋতুপর্ণ দরজা খোলেন নি। এরপর দ্রুত যীশু সেনগুপ্তকে ফোন করেন বিশু। যীশু ও তার স্ত্রী নীলাঞ্জনা সেই মুহূর্তে ডঃ নীরূপ মিত্রের সাথে যোগাযোগ করেন।

ঋতুপর্ণকে পরীক্ষা করে ডাক্তার জানান, ঘুমের দেশে চলে গিয়েছেন পরিচালক। মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলেন, ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে তার। আসলে দীর্ঘদিন ধরে স্লিপিং পিল খাওয়ার জন্যে হার্টে চাপ পড়ছিল তার, এর ফলেই ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তার। চলে যান ঋতু আর রয়ে যায় তার‌ কাজ!

Related Articles

Back to top button