দেশপ্রেমের কারণে জেলবন্দি হতে হয়েছিল অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায় কে, শুধুমাত্র টলিউডের একজন বর্ষীয়ান অভিনেতাই নন ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও

হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়, টলিউডের একটি অতিপরিচিত মুখ। নিজের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে মন কেড়েছিলেন হাজারো দর্শকের। ছোট থেকে বড় উভয় পর্দাতেই যথেষ্ট সাবলীল ছিলেন অভিনেতা। ১৯৪৮ সালে দেবদূত সিনেমার হাত ধরে অভিনয়ের জগতে পদার্পণ তার। এরপর বিভিন্ন জনপ্রিয় পরিচালক সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনের মতো মানুষের সাথে করেছেন একাধিক কাজ। তবে জানেন কি অভিনেতাকে দেশপ্রেমের কারণে জেলে ঢুকতে হয়েছিল! হ্যাঁ ঠিকই বলছি, আসুন দেখেনি জনপ্রিয় অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের কিছু অজানা কথা।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনের যোগ দেওয়ার কারণে তাকে আটক করা হয়। বেশ কিছুদিন জেলবন্দি অবস্থায় থাকেন অভিনেতা। উল্লেখ্য অভিনেতা তার স্কুল জীবন শুরু করেন অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া মিউনিসিপাল স্কুল থেকে। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতার সিটি কলেজ থেকে আই এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ওই বছরই একটি বিমান কোম্পানিতে চাকরি সূত্রে যোগদান করেন অভিনেতা। তবে ১৯৪৮ সালে “দেবদূত” সিনেমার মাধ্যমে অভিনয় জগতে পদার্পণের পর তাকে আর পিছু ঘুরে তাকাতে হয়নি।
চলচ্চিত্র জগতের বহু খ্যাতনামা পরিচালকদের সাথেও কাজ করেছেন তিনি। সত্যজিৎ রায়ের “কাপুরুষ”, “মহাপুরুষ” হোক কিংবা “জয় বাবা ফেলুনাথ” প্রত্যেকটি সিনেমাতেই অনবদ্য ছিলেন হারাধন। পর্দায় অভিনয়ের কথা বাদ দিলেও মঞ্চে অভিনয়ের জন্যও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন অভিনেতা। করেছেন শতশত নাটক। অতীন্দ্র চৌধুরি, ছবি বিশ্বাস এবং উৎপল দত্তের মত বর্ষিয়ান অভিনেতাদের সাথে কাজ করেছেন একাধিক নাটকে। উৎপল দত্তের সাথে “ফেরারি ফৌজ” ছবিতে নজর কেড়েছিলেন তিনি। কিছু বছর আগে বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা “বরফি”তে দেখা যায় অভিনেতাকে।
তার সাহসী কর্মজীবনে পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। তিনি ২০০৫ সালে জাতীয় পুরস্কার পান শ্রেষ্ঠ সরকারি অভিনেতা হিসেবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ২০১১ সালে এটা কে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয়। ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন অভিনেতা। মৃত্যুর কিছুদিন আগে নিউমোনিয়া সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালের ৫ই জানুয়ারি এই বর্ষিয়ান অভিনেতা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।