গসিপ

জন্মদিন নয় জন্মদিনের একমাস পরে মৃণাল সেনের বাড়িতে মিষ্টি হাতে যেতেন রঞ্জিত মল্লিক! বিরক্ত নয় বরং খুশী হতেন পরিচালক!

বাংলা চলচ্চিত্র জগত যতদিন থাকবে, ততদিন পরিচালক মৃণাল সেনের নামটি রয়ে যাবে, অন্য ধারার ছবি তৈরির জন্য। খণ্ডহর, ভুবন সোম, একদিন প্রতিদিন এর মত ছবি করে বাংলা চলচ্চিত্র জগৎকে ঋদ্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। তার ভুবন সোম ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন উৎপল দত্ত এবং ভাষ্যকার ছিলেন স্বয়ং বিগ বি অর্থাৎ অমিতাভ বচ্চন। এই ছবিটি সেই সময় সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা ও সেরা ছবির তিনটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। একটিমাত্র ছবি করে বাংলা চলচ্চিত্রকে তিনটি জাতীয় পুরস্কার এনে দেওয়া এই পরিচালকের আচার ব্যবহারে কোথাও অহং প্রকাশ পেতো না, এতটাই বিনয়ী ছিলেন তিনি। ১৪ মে পরিচালকের ৯৯ তম জন্মদিনে স্মৃতি রোমন্থন করে পরিচালকের কথা বললেন রঞ্জিত মল্লিক।

আরও পড়ুন: প্রযোজকের দাবি নায়িকা চরিত্র পেতে গেলে আলাদা করে সময় দিতে হবে! কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে ছোট পর্দাকে বেছে নেন অপরাজিতা!

রঞ্জিত মল্লিক জানান তিনি কখনও পরিচালকের বাড়িতে পরিচালকের জন্মদিন ১৪ ই মে তে যেতেন না, তিনি সবসময় ২ রা আগস্ট মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে হাজির হতেন। কিন্তু কেন জন্মদিনে নাকি একমাস পরে যেতেন অভিনেতা? এর পিছনে আছে মৃণাল সেনের অপর কীর্তি ইন্টারভিউ ছবির ইতিহাস। ১৯৭১ সালে তিনি ইন্টারভিউ ছবিটি বানানোর সময় নতুন মুখ হিসেবে রঞ্জিত মল্লিক কে বেছে নেন নায়কের ভূমিকায়। নিজে হাতে তাকে তৈরি করে নিয়েছিলেন এই ছবির জন্য আর এই প্রথম ছবি করেই ১৯৭২ এর ২ রা আগস্ট সেরা অভিনেতার আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন রঞ্জিত মল্লিক। সেই কারণে বরাবর অভিনেতা কৃতজ্ঞ তার মৃণাল বাবুর কাছে।

অভিনেতার কথায়, “প্রচন্ড কৃতজ্ঞ আমি তার কাছে। কারন আমার অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল মৃণাল সেনের মতো পরিচালকের হাতে। এই কৃতজ্ঞতা বলে বোঝানোর নয়। আমাকে নেওয়ার ফলে অসম্ভব পরিশ্রম করতে হয়েছিল ওকে। কারণ তখন আমি অভিনয়ের কিচ্ছু জানি না, ওটাই আমার প্রথম ছবি। অভিজ্ঞতার ঝুলি ও তাই শূন্য।” এই কারণে এতটাই পরিচালককে শ্রদ্ধা করেন অভিনেতা যে মৃণাল দা নয়, বরং মৃনাল বাবু বলেই এসেছেন তিনি। তবে স্বনামধন্য পরিচালক আপনি সম্মোধন করলেও নায়ককে নাম ধরেই ডাকতেন।

আরও পড়ুন: রানী রাসমনির জগদম্বা এবার পিলুতে! মিমি দত্তকে কোন নতুন চরিত্রে দেখা যাবে পিলুতে জানেন?

ইন্টারভিউ ছবিতে সফলতা পাওয়ার পর বাণিজ্যিক ধারার ছবি করতে শুরু করেন রঞ্জিত মল্লিক, তবে মৃণাল সেনের ছবি তিনি সব সময় দেখতেন আর ২রা আগস্ট দিনটি তিনি কখনোই ভোলেননি। অভিনেতার কথায়, “১৯৭১ সালের পর থেকে আমি কখনও ১৪ই মে মৃণাল সেনের জন্মদিনে ওর বাড়িতে যায়নি। টানা ৪০ বছর ওর সঙ্গে দেখা করেছি ২ রা আগস্টে। মিষ্টি নিয়ে। মৃণাল বাবুর স্ত্রী গীতা বৌদি কি খুশিই যে হতেন। খুব স্নেহ করতেন আমায়।” আসলে অভিনেতা মনে করেন ২ রা আগস্টের ওই দিনটি তার জন্মদিন ছিলো এবং তার জন্মদাতা মৃণাল সেন।

Related Articles

Back to top button