শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ২১ কোটি টাকা, কি করতেন পার্থবাবুর বিশেষ বান্ধবী অর্পিতা? শুধু অভিনয় এবং মডেলিং নাকি আরো অন্য কিছু?

শনিবার শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে টানা ২৭ ঘন্টা জেরা করার পর গ্রেফতার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অর্থাৎ ইডি। ঐদিন সকাল ১০ টা নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয়ে তাকে। পাশাপাশি গ্রেপ্তার হয় পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ২১ কোটি টাকা এবং ৫০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না। দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত আবাসনে থাকতেন তিনি। এত টাকার উৎস সম্পর্কে ইডির প্রশ্নের সঙ্গতিপূর্ণ উত্তর দিতে না পারায় গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। এরপর বহু প্রশ্ন উঠে আসে। কি করতেন অর্পিতা? এত অর্থের উৎস কি? পার্থ র সাথে তার সম্পর্ক কি? নিজের আয়ের উৎস হিসেবে, অর্পিতা জানিয়েছেন তিনি একজন অভিনেত্রী এবং অভিনয় তার মূল অর্থ আয়ের উৎস।
প্রসঙ্গত ২০০৫ সালে মডেলিং এর হাত ধরে অভিনয় জগতে আসেন অর্পিতা। বেশকিছু সিনেমাতে অভিনয় করেছেন তিনি। বিভিন্ন বাংলা সিনেমাতে দেখা গেছে তাকে। মামা ভাগ্নে, পার্টনারের মত বাংলা সিনেমাতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অর্পিতার মা দাবি করছেন বেশ কিছু ওড়িশা সিনেমাতেও অভিনয় করেছে তার মেয়ে। এছাড়াও নাকি বিভিন্ন তামিল সিনেমাতেও কাজ করেছেন তিনি। অভিনয় এবং মডেলিং ছাড়াও বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে কাজ করতে দেখা গেছে তাকে। এছাড়াও নেইল আর্টের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। তবে এই সমস্ত করে কি এত টাকা উপার্জন করা সম্ভব? ইডির এই প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি অর্পিতা। বিভিন্ন বড় বড় পূজোর বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন তিনি। নাকতলা উন্নয়ন সংঘের পূজোর বিজ্ঞাপনে কাজ এবং দীর্ঘদিন সেই সংঘের নতুন মুখ ছিলেন তিনি। আবার এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।
উল্লেখ্য অর্পিতার মায়ের দাবি তার মেয়ে মডেলিং এবং অভিনয় করতেন। মেয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মা দাবি করেন প্রযোজনার কাজেও যুক্ত ছিলেন তিনি। অর্পিতার মা আরো জানান এ ছাড়া মেয়ে আর কি করতেন তা তার জানা নেই। তিনি কখনো জানতে চাননি। এই সমস্ত ছাড়াও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে অর্পিতার বিভিন্ন ফটো এবং ভিডিও পোস্ট করতেন অভিনেত্রী নিজেই। আবার পার্থর সঙ্গে ভোট প্রচারে ও নেমেছিলেন অর্পিতা। বিভিন্ন সময়ে পার্থর গাড়িতে জনগণের উদ্দেশ্যে ভোট প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল তাকে।
উল্লেখ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির খানাতল্লাশি পরেই সামনে আসে অর্পিতার নাম। এরপরেই অর্পিতার বাড়িতে হানা দেয় ইডি। ফলে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ২১ কোটি টাকা এবং পাঁচ লক্ষ টাকার সোনার গয়না ও বিদেশী মুদ্রা। তার বাড়ি থেকে ২০ টি মোবাইল ফোনও উদ্ধার হয়েছে।এছাড়াও ইডির দাবি আরও সম্পত্তির হদিশ মিলেছে অর্পিতার। বেলঘরিয়ার রথতলা নামক স্থানে এক অভিজাত আবাসনে দু- দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে তার। সেখানকার অধিবাসীদের দাবি, অর্পিতাকে এই ফ্ল্যাটে দেখেছেন তারা। এছাড়াও মাঝেমধ্যেই বেশ কয়েকটি লাল বাতি জ্বালিয়ে গাড়ি আসত ফ্ল্যাটে। তবে তারা অর্পিতার কাছে আছেন কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। অর্পিতার পৈত্রিক বাড়ি বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার আবদুল লতিফ স্ট্রিটে। সেখানে বসবাস করে তার পরিবার। শেষ পর্যন্ত এখনো তার সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানা সম্ভব হয়নি। মডেলিং এবং অভিনয় করে কি এই বিপুল অর্থ আয় করা সম্ভব? সন্দেহ দানা বাঁধছে, আরো কি কি বিষয় জড়িয়ে ছিলেন অর্পিতা?