অভাবের সংসারেও কুড়িয়ে পাওয়া টাকায় হাত দেননি! তিন বছর পর সেই টাকা আসল মালিকের হাতে তুলে দিলেন মাছ বিক্রেতা

পৃথিবীতে যদি পুরোপুরি খারাপ মানুষের ভিড়ে ভরে যেত তাহলে হয়তো পৃথিবীটা আর এত সুন্দর থাকত না। পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছেন সৎ মানুষ আছেন, নির্লোভী মানুষও রয়েছেন। বসিরহাটের আবু কাশেমকে দেখলেই তা হলফ করে বলা যায়।
আরও পড়ুন: ১১ মাস বয়স হলো শ্রেয়া পুত্রের, এখন কেমন দেখতে হয়েছে তাকে জানেন
বসিরহাটের বাসিন্দা আবু কাশেম হলেন সততার অনন্য নজির। সংসারে যথেষ্ট অভাব অনটন লেগে থাকে তার, তবু তার সততা রীতিমতো শিক্ষনীয়। অভাব অনটনের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় তার, করোনার সময় সেই আর্থিক অভাব-অনটন স্বাভাবিকভাবেই আরো বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই সময়েই তিনি ৭০ হাজার টাকার মতো বিশাল সম্পত্তি পেয়েছিলেন, এত বিপুল পরিমানের টাকা পেয়েও তিনি সেখান থেকে এক টাকাও নিজের জন্য খরচ করেন নি বরং সেই টাকা জমিয়ে রেখেছেন বর্তমানে তিন বছর পর সেই টাকার আসল মালিকের হদিশ পেয়ে তিনি সেই টাকা ফেরত দিলেন আসল মালিকের হাতে।
এই দিন পুলিশের সামনে তিন বছর আগে কুড়িয়ে পাওয়া ৭০ হাজার টাকা তিনি ফেরত দিয়ে দেন আসল মালিকের হাতে। পেশায় একজন মাছ বিক্রেতা আবু কাশেম, বসিরহাট এলাকার পুরাতন বাজারে মাছ বিক্রি করেন তিনি। তিন বছর আগে একদিনে বাজারের মধ্যে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি, পরবর্তীতে সেই ব্যাগটি তুলে নিয়ে নিজের কাছে রাখেন তিনি। এরপর ব্যাগটি খুলতেগ তিনি তার ভেতর বিশাল অঙ্কের অর্থ দেখে প্রথমে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন পরে তিনি সেই ব্যাগটিকে সযত্নে তুলে রাখেন ।
আরও পড়ুন: বিক্রি হয়ে গিয়েছে ডাক্তারও, প্রতিবাদে মুখর প্রসেনজিৎ, শুভশ্রী
আবু কাশেম জানান যে, তিন বছর ধরে ব্যাগটিকে হাত পর্যন্ত দেননি তিনি, কিন্তু সম্প্রতি ব্যাগটি খুলতেই তিনি ব্যাগের ভেতরে একটি দোকানের ক্যাশ মেমো দেখতে পান এবং সেখানে লেখা ঠিকানা অনুযায়ী ঐ দোকানে গিয়ে হাজির হন তিনি। সেই দোকানে গিয়ে আবু কাশেম জানতে পারেন যে সেই দোকানের মালিক চম্পক নন্দীরই ব্যাগ এটি। এরপরেই তিন বছর ধরে আগলে রাখা ৭০ হাজার টাকাসহ ঐ ব্যাগটি তার আসল মালিকের হাতে তুলে দেন আবুকাশেম। বর্তমান সমাজে যেখানে মানবিকতার, সততার ক্রমাগত অবক্ষয় ঘটে চলেছে, সেখানে আবুকাশেমের মত একজন মানুষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। প্রবল আর্থিক সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়েও তার হাতের কাছে থাকা বিপুল অঙ্কের টাকায় তিনি হাত পর্যন্ত লাগাননি, আসল মালিককে খুঁজে পাওয়া অবধি শুধু অপেক্ষা করেছেন তাই নয়, নিজে উদ্যোগ নিয়ে আসল মালিককে খুঁজে বার করেছেন এবং আসল মালিকের হাতে সেই টাকা তুলে দিয়েছেন।