এভারেস্টের পরে লোৎসে জয় পিয়ালির! মাথায় ঋণের বোঝা নিয়ে পিয়ালির দুই শৃঙ্গ জয় সকলের কাছে অনুপ্রেরণা!

মনে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে কোন বাধাই বাধা হয়না, সব রকম বাধা এবং প্রতিবন্ধকতাকে মনের জোরেই জয় করা যায় যেমনটা করেছেন চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালি বসাক। মাথায় ঋণের বোঝা নিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন তিনি , এভারেস্ট জয়ের পর এইবার লোৎসেতেও পা রেখে নজির সৃষ্টি করলেন পিয়ালি। একটি নয় জোড়া শৃঙ্গ অভিযানে তিনি আজ সফল।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপের নীল আকাশের নীচে বেগুনি বিকিনিতে কৌশানীকে দেখেই ঘুম হারায়িছেন প্রেমিক বনি
আড়াই বছর বয়স থেকেই পাহাড়ের প্রতি টান ছিলো তার, এই দেখে বাবা- মাও মেয়ের পাহাড়ে ওঠার নেশার স্বপ্নে শরিক হন। মাত্র ৬ বছর বয়স থেকে ট্রেকিং শুরু হয়ে যায় পিয়ালির এরপর ৩১ বছর বয়সে অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই এভারেস্টে উঠে অনন্য নজির তৈরি করে ফেলেন চন্দননগরের এই মেয়ে। এর আগে গত অক্টোবরে অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া পৃথিবীর সপ্তম সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ধৌলগিরি জয় করেছিলেন পিয়ালি। দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে এই কৃতিত্ব তৈরি করার সাত মাসের মধ্যে আবার জোড়া শৃঙ্গ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করলেন পিয়ালি। ২০১৮ সালে অষ্টম সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মানাসলুও জয় করেন তিনি।
অতিরিক্ত অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়াই এভারেস্ট এবং লোৎসে শৃঙ্গ জয় করার পরিকল্পনা ছিল পিয়ালির। তবে রবিবার অতিরিক্ত খারাপ আবহাওয়ার জন্য ৮৪৫০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে বাকি পথটুকু অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। তখন থেকেই তার পরিকল্পনা ছিল এভারেস্ট সামিট শেষে ক্যাম্প ৪ এ ফিরে যত দ্রুত সম্ভব লোৎসে জয়ে এগোবেন তিনি।
এরপর সোমবার সকাল ১১ টায় ক্যাম্প ফোর থেকে বেরিয়ে ছিলেন পিয়ালি। সোমবার সন্ধ্যার সময় পিয়ালি লোৎসে জয় করেন। যদিও এভারেস্ট থেকে নামার পর স্লো ব্লাইন্ডনেস হয়েছিল তার তবুও পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম শৃঙ্গ লোৎসে শৃঙ্গ জয়ের ক্ষেত্রে তা বাধা হয়নি। ৮৫১১ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট লোৎসে জয় করেন পিয়ালি। গত মঙ্গলবার মেয়ের এই জোড়া শৃঙ্গ জয়ের খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে যান পিয়ালীর গোটা পরিবার।
বহুদিন ধরে এভারেস্ট জয়ের প্রস্তুতি নিলেও আর্থিক বাধা সামনে প্রতিবন্ধকতার মতো দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। নিজের যাবতীয় সঞ্চয় এমনকি বাড়ি বন্ধক রেখে ও এভারেস্ট অভিযানের অর্থ সঞ্চয় হচ্ছিল না। বাড়ি এবং নিজের যাবতীয় সঞ্চয়কে একত্র করে পিয়ালির ১৮ লাখ টাকা হয়েছিল, অন্যদিকে এভারেস্ট অভিযানের জন্য দরকার ছিল ৩৫ লাখ টাকা। নেপাল সরকার বলেই দিয়েছিলেন পুরো টাকা না পেলে তারা অভিযান করতে দেবেন না। সেই সময় জনসাধারণকে পিয়ালি আবেদন করেন তাকে অর্থ সাহায্য করবার জন্য, তখন জনসাধারণের অর্থসাহায্যে ৫ লাখ টাকা উঠে আসে, এরপরও ১২ লাখ টাকার দরকার ছিল, সেই টাকার যোগাড় করতে এগিয়ে আসে তার এজেন্সি। তারা বাকি টাকা দিয়ে সাহায্য করলে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের অনুমতি পান পিয়ালি।