Success Stories

বাংলা বনাম ইংরেজি ভাষার যুদ্ধে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া, উঠে এলো এমন একজন বাঙালি যিনি বাংলায় লিখে হয়েছিলেন IAS

আজ এমন একজন বাঙালিকে নিয়ে কথা বলবো যার কাহিনী এই সমকালীন পরিস্থিতিতে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক হবে। বাঙালি মায়ের এক সন্তান তন্ময় চক্রবর্তী যিনি কিনা মাতৃভাষা বাংলায় সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। যদিও তন্ময় বাবুর প্রথম শুরুর দিক টা অন্যরকম ছিল। বিটেক পাশ করেছিলেন প্রথম শ্রেণীতে গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কনসার্ন বিষয়ের ওপর। তারপরেই তাঁর মাথায় হঠাৎ চিন্তা আসে অল ইন্ডিয়া সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসার জন্য। তবে এই কথা আগেও অনেকের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করবার পর সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়ে সফলতা অর্জন করা কিন্তু তন্ময় বাবুর ক্ষেত্রে গল্পটা অনেকটাই অন্যদের থেকে ভিন্ন।

আরও পড়ুন: “আমার দেশ তথা দেশবাসীদের এহেন চরম পরিস্থিতিতে দেখে একজন শ্রীলঙ্কান হিসেবে খুব কষ্ট হচ্ছে।” – শ্রীলঙ্কান সুন্দরী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ এর আবেগঘন পোস্ট নিজের দেশের জন্য

তিনি সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও একজন বাঙালি সন্তান হয়ে তিনি চেয়েছিলেন একেবারে মাতৃভাষা বাংলায় পরীক্ষা দেওয়ার কথা। এই চিন্তা সমাজের আর সবার থেকে যে একেবারে অন্যরকম তার সাথে সাথে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং এটা বলাই চলে। সিদ্ধান্ত জানার পর , তাঁর সমস্ত সহপাঠীরা তাঁকে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বললেও কোনোমতেই তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াননি উলটে জেদ আরও চেপে গিয়েছিলো তাঁর।

যে ধারণা আমাদের বহুদিন থেকে মনে গেঁথে বসে আছে সেইসঙ্গে যে বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল হয়ে রয়েছে বিগত কিছুদিন যাবত , বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করে কোনো বড়ো ইন্টারভিউ ক্রাক করা যায়না। সেই চিন্তা ধারা কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একেবারে স্রোতের বিপরীতে হেঁটে তার সাথে সাথে সফলতা লাভ করেছিলেন তিনি। সমাজের জন্য একটি আদর্শ স্থাপন করেছিলেন। তবে বাংলা ভাষার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ কেবল নয় তার সাথে সাথে তিনি বাংলা ভাষা ঠিক কতটা বলিষ্ঠ কতোটা সমৃদ্ধ তাই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন একটি সাক্ষাৎকারে। বাংলা ভাষা যে আর কোনো ভাষার থেকে কোনো অংশেই এতটুকুও পেছনে পড়ে নেই বা বাংলা ভাষাকে হেয় প্রতিপন্ন করার কোনো প্রয়োজনেই সেই সত্য প্রমাণিত করতে তিনি লক্ষ্য স্থির করেছিলেন বাংলা ভাষাতেই সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।

আরও পড়ুন: ফের বলি পাড়ায় হেভিওয়েট বিয়ের গুঞ্জন! সূত্রের খবর বলছে আগামী ১৪ এপ্রিল রণবীর-আলিয়া সাত পাঁকে বাঁধা পড়তে চলেছেন

তবে বাংলায় পরীক্ষা দেওয়ার দরুন পরীক্ষার প্রস্তুতিতে অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল তাঁকে। সম্পূর্ণ পরীক্ষা বাংলা ভাষায় দিয়েছিলেন বলে সমস্ত উত্তর নিজের চেষ্টায় বাংলায় লিখে নিয়মিত অভ্যেস করার চেষ্টা করতেন তিনি। ইতিহাস ও ভূগোল ছিল তাঁর ঐচ্ছিক বিষয়। এই কাজে অবশ্য তন্ময় বাবুকে তাঁর পরিবার এবং শিক্ষকরা অত্যন্ত সাহস ও মনের জোর জুগিয়েছেন। স্বপ্নের সূত্রপাত ঘটেছিল ২০০২ সালে অবশেষে বহু বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ২০০৫ সালে তিনি সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সম্মানের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ২০০৬ সালে একজন সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে নিজের একমাত্র ব্যতিক্রমী চিন্তা ধারা এবং সেইসঙ্গে কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা সফলতার রাস্তা চওড়া করেছিলেন।

তন্ময়ের এমন নির্ভীক , দৃড়চেতা মানসিকতাই তো তাঁকে দিয়েছিল এগিয়ে যাওয়ার সাহস , এগিয়ে যাওয়ার মূল মন্ত্র যাঁর করে তন্ময় হয়েছে সফল। তন্ময়ের মত এমন বাংলা ভাষায় গর্বে গর্বিত হয়ে নিজের ভাষাকে সসম্মানে জয়ী করে আনতে কতজন পারে! এখানেই তো বাঙালির সাফল্য নিহিত রয়েছে। কুর্নিশ জানায় তন্ময় চক্রবর্তীর এমন মানসিকতা কে!

Related Articles

Back to top button