‘উচ্চশিক্ষিত বেকার’ খারাপ বলে ছেড়েছে প্রেমিকা! খারাপ চা করেই আজ তাই দেশখ্যাত শুভেন্দু!

জীবনে যখন কোন জায়গায় গিয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারে না মানুষ, তখন ঘুরেফিরে খারাপ কথাটি তার সঙ্গী হয়ে ওঠে। উচ্চ শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও যখন কেউ সেভাবে যোগ্যতা অনুসারে চাকরি পায়না, তখনও তাকে খারাপ কথাটি শুনতে হয়। আবার কোন মানুষকে ছেড়ে যাওয়ার অজুহাত দিতে গেলেও আমরা খারাপ কথাটি ব্যবহার করি। কিন্তু চা খারাপ এই কথাটা খুব একটা শোনা যায়না আর যদি সেই চা খারাপ হয়, তাহলে মানুষ আর দ্বিতীয়বার সেই চা খায়না। কিন্তু এমন একটা জায়গা আছে যেখানে শুধু খারাপ চা বিক্রি হয় তাই নয়, সেখানে রীতিমতো খারাপ চা হাতে নিয়েই বসে আড্ডার আসর, খদ্দের সামলাতে সামলাতে নাজেহাল হয়ে যান খারাপ চা বানাতে থাকা মানুষটি। অবাক লাগছে তাই তো? হ্যাঁ সত্যিই খারাপ চা বানিয়েই আজ সকলকে অবাক করে দিচ্ছেন শুভেন্দু।
সংস্কৃত অনার্স পড়া শুভেন্দু ডি এল এড করেও চাকরি পাননি, তাই পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন সবার কাছ থেকে একটা সময় পর খোঁটা শুনতে শুরু করেন। সবাই বলতে শুরু করেন যে, তার পড়াশোনার মান খারাপ বলেই একটা চাকরি জোটাতে পারল না সে। শিক্ষিত বেকার ছেলে চাকরি পায়নি তাই ‘খারাপ’ বলে ছেড়ে চলে গেছে প্রেমিকাও। ভাগ্যের সঙ্গে জুড়ে থাকা এই খারাপ শব্দটিকেই এবার জীবনের সাথে জুড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শুভেন্দু তার চা তাই খারাপ চা! বুঝলেন না তো?
২৮ বছরের শুভেন্দু এরপর একটি চায়ের দোকান খুলে ফেলে তার সেই চায়ের দোকানের নাম ‘শুভেন্দুর খারাপ চা’। চা কতটা খারাপ তাই খেয়েই বুঝে যান ক্রেতারা তাই তো এই খারাপ চায়ের টানেই ভিড় করেন শুভেন্দুর দোকানে। বাঁকুড়া পুরুলিয়া রাস্তার পাশে দুবরাজপুর মোড়ে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু করা শুভেন্দুর চায়ের দোকান আজ রমরমিয়ে চলছে। ক্রেতাদের নিয়ে আজ তার ব্যবসা ভালোই চলছে। তবে চায়ের দোকানের নামের সাথে খারাপ শব্দটি জোড়া সম্পর্কে কী বলবেন শুভেন্দু?
শুভেন্দুর কথায়,“ খারাপ শব্দটি নিজের জীবনের সঙ্গে এভাবে জড়িয়ে যাওয়ায় ভেবেছিলাম দোকানের নামেও থাক সেই শব্দটা আর তা ভেবেই দোকানের নাম রেখেছি শুভেন্দুর খারাপ চা।” কিন্তু দোকানের নামে খারাপ শব্দ টা যোগ হওয়ায় ব্যবসায় কোন প্রভাব পড়ে না? এই প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন,“রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে অনেকেই বিজ্ঞাপন দেখে খারাপ চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে পরখ করে নেন আমার চা ঠিক কতটা খারাপ!”